উপদেষ্টা হিসেবে বিতর্কিত কাউকে যেন নিয়োগ দেয়া না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধনের পর কালিবাড়ির নিজ বাসভবনে বুধবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ একটা কাজ খুব সফলভাবে করেছে। তা হলো আমাদের জাতিকে বিভক্ত করেছে। এই বিভক্তি দূর করে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। রাজনীতিক মতামত ভিন্ন থাকবে, কিন্তু ঐক্য থাকবে মৌলিক কিছু বিষয়ে।
‘যেমন: বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়ে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিষয়ে, বাংলাদেশর মানুষের অধকারের বিষয়ে। এই বিষয়গুলোতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই ঐক্য রাখার ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করেছি এবং সফলও হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এ আন্দোলনকে শেষ পর্যায়ে বেগবান করার জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৬৩টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করেছি। বাম, ডান, মধ্যপন্থি সব দল সেদিক থেকে বলব, গণঅভ্যুত্থানে অনেকটা কাজ হয়েছে এবং চূড়ান্ত অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জিত হয়েছে।
‘এখন যেটা আমি মনে করি এবং এখন যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার, জাতি হিসেবে আমাদের অসহিষ্ণু হলে চলবে না; আমাদের সহনশীল হতে হবে। ১৭ বছরের একটা জঞ্জাল, একটা গার্বেজ তৈরি করা হয়েছে। এটা সত্যি কথা বলতে ১৭ দিনেও সম্ভব না, ১৭ মাসেও সম্ভব না। তাদের সময় দিতে হবে।’
সরকারের করণীয় নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তাদের প্রধান যে দায়িত্ব আমরা বারবার করে বলছি, তাদের সব সংস্কার তাদের হাত দেয়ার আমরা মনে করি খুব বেশি প্রয়োজন নাই। নির্বাচিত যে পার্লামেন্ট আসবে, সে পার্লামেন্ট সে কাজগুলো করবে। এই সরকারের দায়িত্ব হবে নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। সকলে যেন ভোট দিতে পারে, সকলে যেন অংশগ্রহণ করতে পারে।
‘আর ভোটের যে সিস্টেম আওয়ামী লীগ করে গেছিল, সেগুলো নির্মূল করে। নিরপেক্ষ লোকজনকে নির্বাচন কমিশনে বসানো। বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ করা, অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে নিরপেক্ষ করা, নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য এগুলোই হচ্ছে প্রধান কাজ।’
নতুন উপদেষ্টা নিয়োগে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা ও রাজনীতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করা হয় কি না, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এত বড় একটি দেশ পরিচালনা করার জন্য কাকে উপদেষ্টা নিয়োগ দেবে, এটি নির্ভর করে প্রধান উপদেষ্টার ওপর। এখানে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। তারা চাইলে করতেই পারে। আমি বলব তারা যেন সতর্ক থাকেন।
‘যাদের উপদেষ্টা হিসেবে নেবেন, তারা যেন বিতর্কিত না হয়। আমি খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, এ সরকারকে সফল করার দায়িত্ব আমাদেরও। কারণ আন্দোলন আমরাও করেছি। সুতরাং আমাদের সহনশীল হতে হবে।’